১১টি শারীরিক সমস্যা (২০ সপ্তাহের স্ক্যান)
হালনাগাদ করা হয়েছে 18 ডিসেম্বর 2024
1. স্ক্রিনিং করানোর উদ্দেশ্য
এই স্ক্যানটি গর্ভকালীন সময়ের ১৮ সপ্তাহ থেকে ২০ সপ্তাহের মধ্যে করা হয় এবং সাধারণত এটাকে ২০-সপ্তাহের স্ক্যান বলা হয়। কখনও কখনও এটাকে মিড-প্রেগনেন্সি (মধ্য গর্ভাবস্থা) স্ক্যান ও বলা হয়।
স্ক্যানে শুধুমাত্র শিশুর মধ্যে ১১টি ভিন্ন সমস্যা রয়েছে কি না তা জানার চেষ্টা করে এবং এতে শিশুটির সকল সমস্যা হয়তো নাও জানা যেতে পারে।
১১টি শারীরিক সমস্যা (২০ সপ্তাহের স্ক্যান)
2. এই সমস্যাগুলোর বিষয়ে
স্ক্যানের মাধ্যমে শিশুটির হাড়, হার্ট, মস্তিষ্ক, মেরুদণ্ড, মুখমণ্ডল, কিডনি ও তলপেট বিস্তারিতভাবে দেখা হবে। অধিকাংশ ক্ষেত্রে স্ক্যানে দেখা যাবে যে শিশু প্রত্যাশা অনুযায়ী বাড়ছে কিন্তু কখনও কখনও কোন সমস্যার বিষয়ে জানা যেতে পারে বা তা থাকার সন্দেহ জেগে উঠতে পারে। কিছু সমস্যা অন্যান্য সমস্যার তুলনায় সহজেই স্পষ্ট বোঝা যায়। উদাহরণস্বরূপ, অনেক শিশুদের ওপেন স্পাইনা বিফিডা (মেরুদণ্ডের বিশেষ সমস্যা) নামক সমস্যা থাকার ফলে তাদের মেরুদণ্ড ক্ষতিগ্রস্ত হয়।
স্ক্যানের মাধ্যমে স্পাইনা বিফিডা সমস্যা সাধারণত স্পষ্টই দেখা যায় এবং যেসব শিশুদের এই সমস্যাটি আছে, তাদের প্রতি ১০ জনের মধ্যে ৯ জনের (৯০%) সমস্যা সনাক্ত করা যাবে।
কিছু অন্যান্য সমস্যাগুলোকে দেখা আরো বেশি কঠিন হতে পারে, যেমন ধরুন হার্টের সমস্যা। স্ক্যানের মাধ্যমে হার্টে সমস্যা থাকা শিশুদের অর্ধেককেই (৫০%) সনাক্ত করা যাবে।
স্ক্যানে ধরা পড়েছে এমন কিছু কিছু সমস্যাগুলোর অর্থ হল যে শিশুটির জন্মের পরেই সমস্যাগুলোর জন্য চিকিৎসা বা সার্জারির দরকার হতে পারে, উদাহরণস্বরূপ বিকৃত ঠোট। সামান্য সংখ্যক ক্ষেত্রে কিছু মারাত্মক সমস্যা সনাক্ত করা যাবে। উদাহরণস্বরূপ, শিশুটির মস্তিষ্ক, কিডনি, অভ্যন্তরীণ অঙ্গপ্রত্যঙ্গ বা হাড় যেগুলো যথাযথভাবে বেড়ে উঠেনি। কিছু কিছু মারাত্মক বিরল ক্ষেত্রে, দেখা যায় যে সমস্যাটির কোন চিকিৎসা সম্ভব নয়, সেক্ষেত্রে শিশুটি জন্মের পরপরেই বা গর্ভে থাকা অবস্থায় মারা যাবে।
নিম্নলিখিত লিঙ্কের মাধ্যমে গর্ভধারণের মাঝামাঝি সময়ের স্ক্যানে যে সব প্রধান সমস্যাগুলো দেখা হয় সে সম্পর্কে আরও বিস্তারিত তথ্য প্রদান করা হয়েছে: NHS.UK।
3. স্ক্রিনিং পরীক্ষা
বিশেষভাবে প্রশিক্ষিত কর্মীদের দ্বারাই অধিকাংশ স্ক্যান করা হয় যাদেরকে সনোগ্রাফার বলা হয়।
সনোগ্রাফার যাতে করে শিশুটির একটি ভাল ছবি পেতে পারেন সেজন্য একটি মৃদু আলোয় আলোকিত কক্ষে স্ক্যানটি সম্পন্ন করা হয়।
- একটি শয্যাতে আপনাকে শুয়ে পড়তে বলা হবে।
- অতঃপর আপনার পরনের কাপড় বুক বরাবর তুলতে এবং স্কার্ট বা ট্রাউজারটিকে কোমর বরাবর নামাতে বলা হবে।
- আলট্রাসাউন্ড জেল যাতে আপনার কাপড়ে না লাগে সেজন্য কাপড়ের আশেপাশে টিস্যু পেপার ঢুকিয়ে দেয়া হবে এরপর আপনার পেটের উপর জেল লাগানো হবে।
- এরপর শিশুর শরীর পরীক্ষার জন্য সনোগ্রাফার হাতে ধরে রাখা যায় এমন একটি বিশেষ যন্ত্র আপনার চামড়ার উপর ঘুরাবেন। বিশেষ যন্ত্রটি ও আপনার ত্বক যাতে ভালোভাবে পরস্পরের সংস্পর্শে থাকে সেটি জেল ব্যবহারের মধ্যে দিয়ে নিশ্চিত করা হয়।
স্ক্যানটি করানোতে আপনি কোন ব্যথা পাবেন না তবে শিশুটিকে ভালো ভাবে দেখার জন্য সনোগ্রাফার হয়তো সামান্য চাপ প্রয়োগ করতে পারেন। এটি হয়তো অস্বস্তিকর হতে পারে। অতঃপর আলট্রাসাউন্ড স্ক্রিনে শিশুটির সাদাকালো ছবি দেখা যাবে। পরীক্ষাটি করার সময়, সনোগ্রাফার স্ক্রিনটি এমনভাবে রাখবেন যাতে করে তিনি শিশুটির ছবি ভালোভাবে দেখতে পান। স্ক্রিনটি তাদের দিকে সরাসরি বা কোনাকুনিভাবে ঘুরানো থাকতে পারে।
অ্যাপয়েন্টমেন্টটি সম্পন্ন হতে সাধারণত প্রায় ৩০ মিনিট সময় লাগে।
মূত্রথলি পূর্ণ অবস্থায় আপনাকে অ্যাপয়েন্টমেন্টে আসতে বলা হতে পারে। অ্যাপয়েন্টমেন্টে আসার পূর্বেই আপনার পরিচর্যায় নিয়োজিত থাকা ডাক্তার বা মিডওয়াইফ সেটি আপনাকে জানিয়ে দিবেন। আপনি নিশ্চিত না হলে তাদের সাথে যোগাযোগ করে সেটি জেনে নিতে পারেন।
স্ক্যান অ্যাপয়েন্টমেন্টের সময় আপনি কাউকে আপনার সাথে নিয়ে আসতে পারেন। অধিকাংশ হাসপাতালে স্ক্যানের সময় বাচ্চাদের সাথে নিয়ে আসার অনুমতি দেয়া হয়না কারণ সেখানে সচরাচর চাইল্ড কেয়ার সুবিধা পাওয়া যায় না। এ সম্পর্কে জানতে দয়া করে আপনি আপনার অ্যাপয়েন্টমেন্টের আগেই হাসপাতালে জিজ্ঞাসা করবেন।
কখনও কখনও শিশুটিকে ভালোভাবে দেখতে পাওয়া কঠিন হয়ে উঠে। এর অর্থ এই নয় যে কোন চিন্তার কারণ রয়েছে। যদি এমন কোন পরিস্থিতি দেখা দেয়, তাহলে আপনাকে গর্ভাকালীন সময়ের ২৩ সপ্তাহের ভিতরে একটি অতিরিক্ত স্ক্যান করানোর প্রস্তাব দেয়া হবে। খুবই কদাচিৎ, এই দ্বিতীয় স্ক্যানটিকে সম্পন্ন করা যেতে পারে না, কেননা উদাহরণস্বরূপ:
- শিশুটি বেখাপ্পাভাবে শুয়ে আছে
- আপনার ওজন গড় ওজনের চেয়ে বেশি
এই ক্ষেত্রে আপনাকে আর একটি স্ক্রিনিং স্ক্যান করানোর প্রস্তাব দেয়া হবে না বরং আপনার শিশুর জন্মের পর একটি সম্পূর্ণ শারীরিক পরীক্ষা করা হবে।
4. পরীক্ষার নিরাপত্তা
আলট্রাসাউন্ড স্ক্যান করানোতে শিশু বা মায়ের কোন জ্ঞাত ঝুঁকি নেই তবে আপনি ২০ সপ্তাহের স্ক্যান করাবেন কিনা সেই সিদ্ধান্ত ভেবেচিন্তে নিবেন। স্ক্যানের মাধ্যমে এমন তথ্য জানা যেতে পারে যার অর্থ হল যে আপনাকে হয়তো আরও গুরুত্বপূর্ণ সিদ্ধান্ত নিতে হতে পারে। উদাহরণস্বরূপ, পরবর্তীতে আপনাকে আরও কিছু টেস্ট করার জন্য বলা হতে পারে যেগুলোতে গর্ভপাতের ঝুঁকি থাকতে পারে।
5. স্ক্রিনিং সম্পূর্ণভাবে আপনার পছন্দ
আপনার স্ক্যানটি করার কোন বাধ্যবাধকতা নেই। অনেক লোকজন জানতে চান যে তাদের সন্তানের ১১টি সমস্যার মধ্যে কোনোটি আছে কিনা আবার কিছু লোকজন সেটি জানতে চান না।
6. পরীক্ষা না করানো
যদি আপনি স্ক্যানটি না করতে চান তবুও আপনি আপনার নিত্য প্রসবপূর্ব (অ্যান্টিন্যাটাল) পরিষেবার সকল অন্যান্য অংশ গ্রহণ করতে পারেন।
7. সম্ভাব্য ফলাফল
অধিকাংশ স্ক্যানেই দেখা যায় যে শিশুটি আশানুরূপ বেড়ে উঠছে এবং ১১টি সমস্যার মধ্যে কোনোটাই পাওয়া যায় না।
যদি কোনো একটি সমস্যা ধরা পড়ে বা তা থাকার সন্দেহ জেগে উঠে তাহলে সোনোগ্রাফর হয়তো স্টাফের একজন অন্য সদস্যের নিকট আরেকটি মতামত জানতে চাইতে পারেন।
স্ক্যানের মাধ্যমে সব সমস্যা জানা যায় না। সবসময়ই এই সম্ভাবনা থাকে যে শিশুটি একটি স্বাস্থ্য সমস্যা নিয়ে জন্ম গ্রহণ করতে পারে যেটি স্ক্যানের মাধ্যমে চিহ্নিত করা যায়নি।
8. অধিকতর পরীক্ষা
শিশুটির এই সমস্যাগুলোর মধ্য কোনোটি আছে কি না তা নিশ্চিতভাবে জানার জন্য আপনাকে হয়তো আরেকটি পরীক্ষা করানোর জন্য বলা যেতে পারে।
যদি আপনাকে আরও পরীক্ষা করানোর কথা বলা হয় তাহলে আপনাকে সে সম্পর্কে আরও তথ্য প্রদান করা হবে যাতে করে এই পরীক্ষাগুলো আপনি করাবেন কিনা সে ব্যাপারে আপনি সিদ্ধান্ত নিতে পারেন। আপনি আপনার কনস্যালট্যান্ট বা মিডওয়াইফের সাথে এ ব্যাপারে আলোচনা করতে সক্ষম হবেন। দরকার হলে, আপনাকে একজন বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকের কাছে পাঠানো (রেফার করা) হতে পারে আর সেটি সম্ভবত অন্য একটি হাসপাতালে হতে পারে।
9. আমার ফলাফল পাওয়া
স্ক্যানের সময় সনোগ্রাফার আপনাকে স্ক্যানের ফলাফল জানিয়ে দিতে পারবেন।
NHS.UK তে সপোর্ট গ্রুপের বিষয়ে অধিকতর তথ্য এবং বিস্তারিত তথ্য পাবেন।
10. এই প্রচারপত্রের বিষয়ে
পাবলিক হেলথ ইংল্যান্ড (PHE) এই প্রচারপত্রটি তৈরী করেছে NHS-এর পক্ষ থেকে